জিম করলে কি হয়? আপনি কি জিম না করে ঠকছেন?

জিম করলে শরীরের শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকেই অনেক উপকার হয়। শারীরিকভাবে, জিম করলে শরীরের পেশী বাড়ে, মেদ কমে, হাড় মজবুত হয়, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো হয়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
মানসিকভাবে, জিম করলে স্ট্রেস কমে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে, এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়। জিম করার উপকারিতা সম্পর্কে আরো জানুন এখানে।

শারীরিক উপকার

  • পেশী বৃদ্ধি: জিম করার সময় শরীরের পেশীগুলোকে কাজ করতে হয়। এই কাজের ফলে পেশীগুলো আরও শক্তিশালী এবং বড় হয়ে ওঠে।
  • মেদ হ্রাস: জিম করার সময় শরীরের ক্যালোরি পোড়া হয়। এই ক্যালোরি পোড়ানোর ফলে শরীরের মেদ কমে।
  • হাড় মজবুতকরণ: জিম করার ফলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে। এতে হাড় শক্তিশালী হয় এবং হাড়ের রোগের ঝুঁকি কমে।
  • হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: জিম করার ফলে হৃদযন্ত্রের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: জিম করার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

 

মানসিক উপকার

  • স্ট্রেস হ্রাস: জিম করার ফলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ হয়। এই হরমোন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
  • আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: জিম করার ফলে শরীরের গঠন সুন্দর হয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়: জিম করার ফলে মানসিক চাপ কমে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়।

 

জিম না করলে কী হয়?

নিয়মিত জিম না করলে বা হঠাৎ জিম ছেড়ে দিলে শরীরের পেশীগুলো দুর্বল হতে শুরু করে এবং মেদ জমতে থাকে। এতে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়, হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে।

 

জিম করার নিয়ম

জিম করার সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই নিয়মগুলো হল:

  • প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন: জিম শুরু করার আগে একজন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন। তিনি আপনাকে আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী একটি ভালো ব্যায়াম কর্মসূচি তৈরি করে দেবেন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: জিম করার জন্য প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যায়াম করা উচিত।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: ব্যায়ামের পর পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। এতে পেশীগুলো ভালোভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান: জিম করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব পূরণ হয় এবং ব্যায়ামের ফলে শরীরের ক্ষতি পূরণ হয়।

 

অল্প বয়সে জিম করলে কি হয়?

অল্প বয়সে জিম করলে শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকেই অনেক উপকার হয়। শারীরিকভাবে, অল্প বয়সে জিম করলে শরীরের পেশী বৃদ্ধি পায়, মেদ কমে, হাড় মজবুত হয়, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো হয়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। মানসিকভাবে, অল্প বয়সে জিম করলে স্ট্রেস কমে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে, এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়।

শারীরিক উপকার

  • পেশী বৃদ্ধি: অল্প বয়সে জিম করলে শরীরের পেশীগুলো আরও সহজে বৃদ্ধি পায়। কারণ অল্প বয়সে শরীরের হাড় এবং পেশীগুলো খুবই নমনীয় হয়।
  • মেদ কমে: অল্প বয়সে জিম করলে শরীরের মেদ কমে যায়। কারণ অল্প বয়সে শরীরের বিপাক হার বেশি থাকে।
  • হাড় মজবুতকরণ: অল্প বয়সে জিম করলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে। এতে হাড় শক্তিশালী হয় এবং হাড়ের রোগের ঝুঁকি কমে।
  • হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: অল্প বয়সে জিম করলে হৃদযন্ত্রের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: অল্প বয়সে জিম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

মানসিক উপকার

  • স্ট্রেস কমে: অল্প বয়সে জিম করলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ হয়। এই হরমোন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
  • আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: অল্প বয়সে জিম করলে শরীরের গঠন সুন্দর হয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজেকে সুন্দর দেখার ফলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়: অল্প বয়সে জিম করলে মানসিক চাপ কমে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হয়। জিম করার ফলে মন ভালো থাকে এবং জীবনে ইতিবাচক মনোভাব আসে।

অল্প বয়সে জিম করার নিয়ম

অল্প বয়সে জিম করার সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই নিয়মগুলো হল:

  • প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন: অল্প বয়সে জিম শুরু করার আগে একজন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন। তিনি আপনাকে আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী একটি ভালো ব্যায়াম কর্মসূচি তৈরি করে দেবেন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: অল্প বয়সে জিম করার জন্য প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যায়াম করা উচিত।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: ব্যায়ামের পর পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। এতে পেশীগুলো ভালোভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান: অল্প বয়সে জিম করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব পূরণ হয় এবং ব্যায়ামের ফলে শরীরের ক্ষতি পূরণ হয়।

অল্প বয়সে জিম করার কিছু ঝুঁকি

অল্প বয়সে জিম করার কিছু ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকিগুলো হল:

  • পেশী ও হাড়ের আঘাত: অল্প বয়সে জিম করার সময় প্রশিক্ষকের পরামর্শ না নিলে পেশী ও হাড়ের আঘাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত চাপ: অল্প বয়সে জিম করার সময় অতিরিক্ত চাপের কারণে মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অপুষ্টি: অল্প বয়সে জিম করার সময় স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে অপুষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অল্প বয়সে জিম করার সময় এই ঝুঁকিগুলো এড়াতে একজন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।

 

প্রাপ্ত বয়সে জিম করলে কি হয়?

প্রাপ্ত বয়সে জিম করলে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি হয়:

  • শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের পেশী, হাড় এবং অস্থিসন্ধির শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা সহজ হয় এবং আঘাতের ঝুঁকি কমে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। জিমে কার্ডিও ব্যায়াম এবং ওজন উত্তোলনের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরে যায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় থাকে।
  • হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কার্ডিও ব্যায়াম হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তনালীগুলোকে সুস্থ রাখে। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। জিমে ব্যায়াম করলে শরীরে এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মন ভালো রাখে এবং স্ট্রেস কমায়।
  • আত্মবিশ্বাস বাড়ে। শরীরের চেহারা সুন্দর এবং ফিট হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

প্রাপ্ত বয়সে জিম করার কিছু টিপস:

  • একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে পরামর্শ নিন। প্রশিক্ষক আপনাকে সঠিক ব্যায়াম পদ্ধতি শেখাতে পারবেন এবং আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন।
  • আপনার শারীরিক অবস্থা এবং লক্ষ্য অনুযায়ী ব্যায়াম পরিকল্পনা করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। সপ্তাহে অন্তত তিনবার ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।
  • প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো শরীরের পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয়।

প্রাপ্ত বয়সে জিম করা একটি স্বাস্থ্যকর এবং উপকারী অভ্যাস। তবে সঠিকভাবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলেই এর সকল সুবিধা পাওয়া যায়।

 

আপনি যখন ব্যায়াম শুরু করেন তখন আপনার শরীরের কী ঘটে?

যখন আমরা ব্যায়াম শুরু করি তখন আমাদের শরীরের অনেক পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনগুলি আমাদের শরীরকে আরও সুস্থ এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস: ব্যায়াম করার সময় আমাদের হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস আরও বেশি কাজ করে। ফলে আমাদের হৃদযন্ত্রের পেশিগুলি শক্তিশালী হয় এবং আমাদের ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

পেশী: ব্যায়াম করার সময় আমাদের পেশীগুলি সংকুচিত হয় এবং প্রসারিত হয়। ফলে আমাদের পেশীগুলি শক্তিশালী হয় এবং আকারে বড় হয়।

কঙ্কাল: ব্যায়াম করার সময় আমাদের হাড়গুলি শক্তিশালী হয়। ফলে আমাদের হাড়ের ভর এবং ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

ক্যালোরি পোড়া: ব্যায়াম করার সময় আমাদের শরীর প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি পোড়ায়। ফলে আমাদের ওজন কমতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য: ব্যায়াম করার ফলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। ব্যায়াম আমাদের স্ট্রেস কমাতে, মন ভালো করতে, এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।

বয়স বাড়ার প্রভাব কমায়: ব্যায়াম আমাদের শরীরের বয়স বাড়ার প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে।

 

ব্যায়াম শুরু করার সময় আমাদের শরীরের যেসব পরিবর্তন হয় সেগুলি হল:

  • হৃদস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি পায়।
  • শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
  • পেশীতে ব্যথা হতে পারে।
  • ঘাম হতে পারে।

ব্যায়াম শুরু করার সময় এই পরিবর্তনগুলি স্বাভাবিক। তবে, যদি এই পরিবর্তনগুলি খুব বেশি হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

ব্যায়াম শুরু করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিত:

  • আপনার শারীরিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যায়াম করুন।
  • ব্যায়াম শুরু করার আগে পর্যাপ্ত ওয়ার্ম-আপ করুন।
  • ব্যায়াম করার সময় ধীরে ধীরে ওজন বাড়ান।
  • ব্যায়াম করার পর পর্যাপ্ত কুল-ডাউন করুন।
  • ব্যায়াম করার পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী হয়।

 

উপসংহার

নিয়মিত জিম করা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। জিম করার ফলে শরীরের পেশী বৃদ্ধি পায়, মেদ কমে, হাড় মজবুত হয়, হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো হয়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও, জিম করার ফলে মানসিক চাপ কমে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।