জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা [বিস্তারিত]

জিম করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা শরীরের গঠন, শক্তি, এবং দৈহিক সুস্থতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জিম করার অনেক উপকারিতা রয়েছে, তবে কিছু অপকারিতাও রয়েছে।

নিচে প্রথমে আমরা জানবো জিম করার উপকারিতা ও জিম করার অপকারিতা কি কি। তারপর জানবো জিম করলে কি কি ক্ষতি হয় এবং জিম করলে কি হয়, জিম করা ভালো নাকি খারাপ।

জিম করার উপকারিতা

জিম করার উপকারিতাগুলি নিম্নরূপ:

  • শরীরের গঠন এবং শক্তি বৃদ্ধি: জিম করার মাধ্যমে পেশীর ভর বৃদ্ধি করা যায়। এটি শরীরকে আরও সুঠাম এবং শক্তিশালী করে তোলে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: জিম করার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
  • হৃদরোগ এবং অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি কমানো: জিম করা হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, এবং অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • মানসিক চাপ কমানো: জিম করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি উদ্বেগ এবং বিষন্নতার ঝুঁকি কমায়।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: জিম করা ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গড়ে তোলা: জিম করা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গড়ে তোলার একটি দুর্দান্ত উপায়। এটি একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি গ্রহণ করার সম্ভাবনা বাড়ায়।

 

জিম করার অপকারিতা

জিম করার কিছু অপকারিতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • অতিরিক্ত ব্যায়াম: অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এটি পেশী ব্যথা, আঘাত, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • নিরাপত্তাহীনতা: জিম করার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে না চললে আঘাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত ব্যয়: জিম সদস্যতা এবং ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণের মতো জিম করার সাথে যুক্ত কিছু খরচ হতে পারে।

 

জিম করার নিয়মিততা

জিম করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। তবে, সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন জিম করা উচিত। প্রতিটি জিম স্যেশনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।

 

জিম করলে কি কি ক্ষতি হয়?

জিম করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা অনেক উপকার প্রদান করে। তবে, জিম করার সময় সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ না নিলে বা সতর্কতা অবলম্বন না করলে কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

জিম করার কিছু সাধারণ ক্ষতি হল:

  • পেশী ব্যথা: জিম করার পর পেশী ব্যথা একটি সাধারণ ঘটনা। এটি পেশীর ক্ষতি এবং পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার কারণে হয়। পেশী ব্যথা সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়।
  • আঘাত: জিম করার সময় সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ না নিলে বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে না চললে আঘাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আঘাতের ধরনগুলির মধ্যে রয়েছে পেশী টান, ছিঁড়ে যাওয়া, এবং জয়েন্টের আঘাত।
  • ওভারট্রেনিং: অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এটি পেশী ব্যথা, আঘাত, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • নিরাপত্তাহীনতা: জিম করার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে না চললে আঘাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। জিমে সাধারণ নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিগুলির মধ্যে রয়েছে ওজন তোলার সময় ওজন নিয়ন্ত্রণ না করা, যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার সময় সঠিক পদ্ধতি না জানা, এবং জিমে থাকা সময় মনোযোগ না দেওয়া।
  • অতিরিক্ত ব্যয়: জিম সদস্যতা এবং ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণের মতো জিম করার সাথে যুক্ত কিছু খরচ হতে পারে।

জিম করার সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা উচিত যাতে ক্ষতির ঝুঁকি কমানো যায়:

  • একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া। একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক আপনাকে সঠিক ব্যায়াম পদ্ধতি এবং নিয়মিততা সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন।
  • জিম করার সময় শরীরের সীমাবদ্ধতা মেনে চলা। আপনার শরীরের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করার চেষ্টা করবেন না।
  • অতিরিক্ত ওজন তোলা থেকে বিরত থাকা। আপনার শরীরের জন্য যে পরিমাণ ওজন নিরাপদ তা নিরূপণ করুন এবং সেই পরিমাণের ওজন দিয়ে শুরু করুন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করা। ব্যায়াম করার সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা। জিম করার সময় স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।

জিম করার সময় এ সকল সতর্কতা অবলম্বন করলে ক্ষতির ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।

 

জিম করা ভালো নাকি খারাপ?

জিম করা ভালো নাকি খারাপ তা নির্ভর করে জিম করার পদ্ধতি এবং ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর। সঠিকভাবে এবং নিয়মিত জিম করলে তা অনেক উপকার বয়ে আনে। তবে, সঠিকভাবে না করলে বা অতিরিক্ত করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।

জিম করা ভালো নাকি খারাপ তা নির্ধারণ করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত:

  • ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা: জিম করার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
  • জিম করার পদ্ধতি: একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত।
  • নিয়মিততা: নিয়মিত জিম করা উচিত।
  • সতর্কতা অবলম্বন: জিম করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

 

উপসংহার

জিম করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা অনেক উপকার প্রদান করে। তবে, জিম করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যাতে কোনও ক্ষতি না হয়।