চিকন মানুষ জিম করলে কি হয়? – চিকনদের জন্য জিম

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি চিকন না সাস্থ্য ভালো নয়। আমরা জিম করতে পারবো কিনা বা করা উচিত হবে কিনা তা নিয়ে আমরা অনেক চিন্তায় থাকি। আসলে চিকন মানুষের জিম করা নিয়ে কোন সমস্যা নেই। নিয়মিত জিম করলে চিকন মানুষ সুস্থ ও ভালো জীবন যাপন করতে পারবে।

চিকন মানুষ জিম করলে নিম্নলিখিত উপকার হয়:

  • শরীরের ওজন বাড়ে। জিমে ওজন টেনে, স্ট্রেচিং করে, এবং অন্যান্য ব্যায়াম করে চিকন মানুষ তাদের শরীরের ওজন বাড়াতে পারে। এটি পেশী তৈরি এবং শরীরকে আরও সুস্থ ও শক্তিশালী করে তোলে।
  • শরীরের গঠন সুন্দর হয়। জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের গঠন সুন্দর হয়। পেশী তৈরি হলে শরীরের লাইন সুন্দর হয় এবং আরও আকর্ষণীয় দেখায়।
  • স্বাস্থ্য ভালো হয়। জিম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।

চিকন মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম করলে মোটা হতে পারবে?

হ্যাঁ, চিকন মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম করলে মোটা হতে পারবে। তবে, শুধুমাত্র ব্যায়াম করলেই হবে না, সাথে সাথে পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং ক্যালোরি গ্রহণও প্রয়োজন। এখানে দেখুন, জিম করে মোটা হবার কার্যকরী পদ্ধতি।

চিকন মানুষের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে চর্বি এবং পেশী নেই। তাই, নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের চর্বি এবং পেশী বাড়তে শুরু করবে। এতে শরীরের ওজন বাড়বে এবং চেহারা মোটা হবে।

চিকন মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে মোটা হতে পারবে। তবে, এটি একটি ধীর প্রক্রিয়া। তাই, ধৈর্য ধরে ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখলে অবশ্যই মোটা হতে পারবে।

 

চিকন মানুষ সুস্থ থাকতে কোন কোন ব্যায়াম করা উচিত?

চিকন মানুষ সুস্থ থাকতে নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলি করা উচিত:

  • ওজন টেনে তোলা: ওজন টেনে তোলা পেশী তৈরির সবচেয়ে কার্যকর উপায়। পেশী তৈরি হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।
  • কার্ডিও: কার্ডিও শরীরের রক্ত ​​সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কার্ডিও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রেচিং: স্ট্রেচিং পেশীকে নমনীয় করে এবং আঘাতের ঝুঁকি কমায়।

এখানে কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে যা চিকন মানুষদের জন্য উপকারী:

  • স্কোয়াট: স্কোয়াট পা, নিতম্ব, এবং কোমরকে শক্তিশালী করে।
  • লেগ প্রেস: লেগ প্রেস পাকে শক্তিশালী করে।
  • বেঞ্চ প্রেস: বেঞ্চ প্রেস বুক এবং কাঁধকে শক্তিশালী করে।
  • পুল-আপ: পুল-আপ পিঠ এবং বাহুর পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।
  • হাঁটা: হাঁটা একটি সহজ এবং কার্যকর কার্ডিও ব্যায়াম।
  • দৌড়: দৌড় একটি আরও চ্যালেঞ্জিং কার্ডিও ব্যায়াম।
  • সাইকেল চালানো: সাইকেল চালানো একটি আরামদায়ক এবং কার্যকর কার্ডিও ব্যায়াম।

 

চিকন মানুষ সুস্থ থাকতে কখন ব্যায়াম করা উচিত?

চিকন মানুষ সুস্থ থাকতে সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন ব্যায়াম করা উচিত। প্রতিদিন ব্যায়াম করা ভালো, তবে যদি সম্ভব না হয় তবে তিন দিন পর পর ব্যায়াম করা যেতে পারে।

চিকন মানুষদের জন্য উপযুক্ত ব্যায়াম সময় হল সকালে বা বিকেলে। সকালে ব্যায়াম করলে সারা দিন শরীরে শক্তি থাকে। বিকেলে ব্যায়াম করলে রাতে ভালো ঘুম হয়।

চিকন মানুষদের জন্য নিম্নলিখিত সময়গুলিতে ব্যায়াম করা উচিত:

  • সকালে ঘুম থেকে উঠে: সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করলে সারা দিন শরীরে শক্তি থাকে এবং মন ফুরফুরে থাকে।
  • বিকেলে: বিকেলে ব্যায়াম করলে রাতে ভালো ঘুম হয়।
  • সন্ধ্যার আগে: সন্ধ্যার আগে ব্যায়াম করলে রাতে ঘুমের সমস্যা হয় না।

তবে, চিকন মানুষদের অবশ্যই তাদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ব্যায়াম করা উচিত। যদি কোনও শারীরিক সমস্যা থাকে তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যায়াম করা উচিত।

 

চিকন হলে কি জিমে যাওয়া যায়? পাতলা মানুষের ব্যায়াম করা কি ভালো?

হ্যাঁ, চিকন হলে জিমে যাওয়া যায়। জিম শুধুমাত্র মোটা মানুষদের জন্য নয়, চিকন বা পাতলা মানুষদের জন্যও উপকারী।

জিমে ওজন টেনে তোলা, স্ট্রেচিং, এবং অন্যান্য ব্যায়াম করে চিকন মানুষ তাদের শরীরের ওজন বাড়াতে, পেশী তৈরি করতে, এবং সুস্থ থাকতে পারে।

চিকন বা পাতলা মানুষ জিমে গেলে নিম্নলিখিত উপকার পাওয়া যায়:

  • শরীরের ওজন বাড়ে। জিমে ওজন টেনে তোলা এবং অন্যান্য ব্যায়াম করে চিকন মানুষ তাদের শরীরের ওজন বাড়াতে পারে।
  • পেশী তৈরি হয়। জিমে ওজন টেনে তোলা পেশী তৈরির সবচেয়ে কার্যকর উপায়। পেশী তৈরি হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।
  • শরীরের গঠন সুন্দর হয়। জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের গঠন সুন্দর হয়। পেশী তৈরি হলে শরীরের লাইন সুন্দর হয় এবং আরও আকর্ষণীয় দেখায়।
  • স্বাস্থ্য ভালো হয়। জিম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।

 

পাতলা মানুষ কেন পাতলা হয়?

পাতলা মানুষ পাতলা হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • জেনেটিক কারণ: কিছু মানুষের জিন তাদেরকে পাতলা হতে প্ররোচিত করে। এই জিনগুলি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • খাদ্যাভ্যাস: যারা পর্যাপ্ত ক্যালোরি গ্রহণ করে না তারা পাতলা হতে পারে।
  • ব্যায়ামের অভাব: যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে না তারা পাতলা হতে পারে।
  • অসুস্থতা: কিছু অসুস্থতা, যেমন হাইপারথাইরয়েডিজম, শরীরের ওজন কমাতে পারে।

পাতলা মানুষের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল:

  • তাদের হাড়ের গঠন পাতলা হয়।
  • তাদের পেশী কম হয়।
  • তাদের শরীরের চর্বি কম হয়।

পাতলা মানুষ পাতলা হওয়ার কারণ নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনও নির্দিষ্ট অসুস্থতার কারণে পাতলা হওয়া হয়, তবে সেই অসুস্থতাটি চিকিৎসা করা জরুরি।

 

ব্যায়াম করলে ওজন কমে না কেন?

ব্যায়াম করলে ওজন কমে, এটাই সাধারণ ধারণা। তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যায়াম করলেও ওজন কমে না। এর কারণ হতে পারে:

  • খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন না করা: ব্যায়াম করলেও ওজন কমাতে হলে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি যে পরিমাণ ক্যালোরি পোড়াচ্ছেন, সেই পরিমাণ ক্যালোরি কম খেয়ে শরীরে প্রবেশ করতে হবে।
  • ব্যায়ামের ধরন সঠিক না হওয়া: ওজন কমাতে হলে কার্ডিও এবং ওজন টেনে তোলার সমন্বয়ে ব্যায়াম করতে হবে। শুধুমাত্র কার্ডিও করলেও ওজন কমতে পারে, তবে পেশী বাড়বে না।
  • ব্যায়ামের সময় অপ্রতুল হওয়া: ওজন কমাতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিটের মাঝারি তীব্রতার কার্ডিও বা ৭৫ মিনিটের উচ্চ তীব্রতার কার্ডিও ব্যায়াম করা উচিত।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম, ওজন কমাতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

যদি আপনি ব্যায়াম করছেন কিন্তু ওজন কমছে না, তাহলে আপনার ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তারা আপনার জন্য উপযুক্ত ব্যায়াম এবং খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারবেন।

এখানে কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে ব্যায়াম করলে ওজন কমতে পারে:

  • আপনার দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালোরির চেয়ে কম ক্যালোরি গ্রহণ করুন।
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। প্রোটিন পেশী তৈরিতে সাহায্য করে।
  • সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিটের মাঝারি তীব্রতার কার্ডিও বা ৭৫ মিনিটের উচ্চ তীব্রতার কার্ডিও ব্যায়াম করুন।
  • নিয়মিত ওজন পরিমাপ করুন।

ওজন কমতে সময় লাগে। ধৈর্য ধরুন এবং পরিশ্রম চালিয়ে যান।

 

ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খেলে ওজন কমে না কেন?

ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খেলে ওজন কমে না কেন তার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

  • ক্যালোরি গ্রহণ ও পোড়ানের মধ্যে সমতা না থাকা: ওজন কমাতে হলে ক্যালোরি গ্রহণ ও পোড়ানের মধ্যে সমতা আনতে হবে। যদি আপনি যতটা ক্যালোরি গ্রহণ করছেন তার চেয়ে বেশি ক্যালোরি পোড়াতে পারছেন, তাহলেই আপনি ওজন কমাতে পারবেন। ব্যায়াম করলে আপনি ক্যালোরি পোড়াতে পারেন, তবে সঠিক খাবার খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাচ্ছেন, তাহলে ব্যায়াম করেও আপনি ওজন কমাতে পারবেন না।
  • ধারাবাহিকতার অভাব: ওজন কমানো একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে যদি আপনি ধারাবাহিক না হন, তাহলে আপনি ওজন কমাতে পারবেন না।
  • কার্ডিও ও ওয়েট লিফটিংয়ের অভাব: ওজন কমাতে হলে কার্ডিও ও ওয়েট লিফটিং উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। কার্ডিও করলে আপনি ক্যালোরি পোড়াতে পারেন, তবে ওয়েট লিফটিং করলে আপনি পেশী তৈরি করতে পারেন। পেশী তৈরি হলে আপনার বিপাক হার বাড়ে, যার ফলে আপনি আরও বেশি ক্যালোরি পোড়াতে পারেন।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: ওজন কমাতে না পারার পেছনে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাও থাকতে পারে। যেমন, থাইরয়েড সমস্যা, ইনসুলিন প্রতিরোধ, এবং কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

আপনি যদি ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খেয়েও ওজন কমাতে না পারছেন, তাহলে একজন ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করুন। তারা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করার জন্য একটি ব্যক্তিগতকৃত পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে।

এখানে কিছু বিষয় রয়েছে যা আপনি নিজেরাই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যাতে আপনি ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমাতে পারেন:

  • আপনার ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ নির্ধারণ করুন: আপনি প্রতিদিন কত ক্যালোরি গ্রহণ করছেন তা নির্ধারণ করার জন্য আপনি একটি ক্যালোরি ট্র্যাকার ব্যবহার করতে পারেন। আপনার দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালোরির পরিমাণ নির্ধারণ করতে আপনি একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
  • আপনার খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনুন: আপনার খাদ্যতালিকায় প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয়, এবং অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার কমিয়ে দিন। ফল, শাকসবজি, এবং সম্পূর্ণ শস্যের মতো স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিমাণ বাড়ান।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি-তীব্রতার কার্ডিও বা ৭৫ মিনিট উচ্চ-তীব্রতার কার্ডিও করার লক্ষ্য রাখুন। এছাড়াও, প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন শক্তি প্রশিক্ষণ করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিন: পর্যাপ্ত ঘুম না নেওয়া হলে ওজন কমানো কঠিন হতে পারে। প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো লক্ষ্য রাখুন।

এই বিষয়গুলি অনুসরণ করে আপনি ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমাতে সক্ষম হবেন।