জিম করলে কি মোটা হওয়া যায়? – সঠিক তথ্য জানুন

জিম করলে মোটা হওয়া সম্ভব, তবে তা নির্ভর করে জিম করার পদ্ধতি এবং খাদ্যাভ্যাসের উপর। জিম করার মাধ্যমে শরীরের পেশী গঠন হয়। পেশী গঠনের জন্য শরীরে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, এবং চর্বির প্রয়োজন হয়।

যদি জিম করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা হয়, তাহলে শরীরে পেশীর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তবে, যদি জিম করার পাশাপাশি অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা হয়, তাহলে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মোটাও হওয়া যায়।

জিমে সাধারণত ওজন তোলার মাধ্যমে পেশী গঠন করা হয়। ওজন তোলার সময় শরীরের পেশীতে ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি পূরণের জন্য শরীরে প্রোটিন প্রয়োজন। প্রোটিন পেশীর বৃদ্ধি এবং পুনর্গঠনে সাহায্য করে। তাই জিম করার সময় পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

জিম করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করাও জরুরি। কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। জিম করার সময় শরীর প্রচুর পরিমাণে শক্তি ব্যয় করে। তাই এই শক্তি পূরণের জন্য পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা উচিত।

জিম করার সময় অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ফলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মোটাও হওয়া যায়।

 

জিম ছেড়ে দিলে কি মোটা হয়ে যায়?

জিম ছেড়ে দিলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, জিম করার মাধ্যমে শরীরের পেশী গঠন হয়। পেশী গঠনের জন্য শরীরে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, এবং চর্বির প্রয়োজন হয়।

জিম করার সময় এই পুষ্টি উপাদানগুলির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তবে, জিম ছেড়ে দিলে এই পুষ্টি উপাদানগুলির চাহিদা কমে যায়। ফলে শরীরে পেশী গঠন কমে যায় এবং চর্বি জমতে শুরু করে।

জিম ছেড়ে দিলে মোটা হয়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হল, ব্যায়াম বন্ধ হয়ে গেলে শরীরের ক্যালোরি পোড়ার হার কমে যায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমতে শুরু করে।

জিম ছেড়ে দিলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমাতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিত:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা: জিম ছেড়ে দিলেও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত।
  • পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করা: জিম ছেড়ে দিলেও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত। হালকা ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি, সাইকেল চালানো ইত্যাদি করা যেতে পারে।

জিম ছেড়ে দিলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

 

মেয়েরা ফিট থাকতে জিম করলে ছেলেদের মত মাসল হয়?

না, মেয়েরা ফিট থাকতে জিম করলে ছেলেদের মত মাসল হয় না। মেয়েদের শরীরে ছেলেদের তুলনায় কম টেস্টোস্টেরন হরমোন থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোন পেশী গঠনের জন্য দায়ী। তাই মেয়েদের শরীরে ছেলেদের তুলনায় কম পেশী গঠিত হয়।

মেয়েরা ফিট থাকতে জিম করলে তাদের শরীরের পেশী কিছুটা বড় হয়, তবে তা ছেলেদের মত বড় হয় না। মেয়েদের শরীরে মাসল তৈরির জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম এবং সময় লাগে।

মেয়েরা জিম করলে নিম্নলিখিত উপকার পায়:

  • শরীরের ওজন কমানো: জিম করার মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়ানো যায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • শরীরের গঠন সুন্দর করা: জিম করার মাধ্যমে শরীরের পেশী গঠন করা যায়, যা শরীরের গঠনকে সুন্দর করে তোলে।
  • শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করা: জিম করার মাধ্যমে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করা যায়।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা: জিম করার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যায়।

মেয়েরা জিম করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে:

  • একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া: একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক আপনাকে সঠিক ব্যায়াম পদ্ধতি এবং নিয়মিততা সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন।
  • শরীরের সীমাবদ্ধতা মেনে চলা: আপনার শরীরের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করার চেষ্টা করবেন না।
  • অতিরিক্ত ওজন তোলা থেকে বিরত থাকা: আপনার শরীরের জন্য যে পরিমাণ ওজন নিরাপদ তা নিরূপণ করুন এবং সেই পরিমাণের ওজন দিয়ে শুরু করুন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করা: ব্যায়াম করার সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা: জিম করার সময় স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।

আরও পড়ুন: জিম করলে কি লম্বা হওয়া যায়

 

মোটা হতে কোন কোন ব্যায়াম করতে হবে তার তালিকা

মোটা হতে হলে শরীরে পেশী গঠন করতে হবে। পেশী গঠনের জন্য নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলি করা যেতে পারে:

  • ওজন তোলা: ওজন তোলা শরীরের পেশী গঠনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ব্যায়াম। ওজন তোলার সময় শরীরের পেশীতে চাপ পড়ে এবং ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি পূরণের জন্য শরীরে প্রোটিন প্রয়োজন। প্রোটিন পেশীর বৃদ্ধি এবং পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
  • স্ট্রেচিং: স্ট্রেচিং পেশীগুলিকে দীর্ঘ এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। স্ট্রেচিং ছাড়া ওজন তোলা করলে পেশীতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 

মোটা হতে হলে নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলি করা যেতে পারে:

  • বুক: বুকের পেশী গঠনের জন্য চেস্ট প্রেস, ডিপস এবং বোডি প্রেস করা যেতে পারে।
  • পিঠ: পিঠের পেশী গঠনের জন্য রো, টেইলডাউন, এবং লং আর্ম রো করা যেতে পারে।
  • বাহু: বাহুতে সামনের, পিছনের এবং বাইরের পেশী থাকে। এই পেশীগুলি গঠনের জন্য বিয়ার প্রেস, লেটারেল রো, এবং বাইসেপ কurl করা যেতে পারে।
  • কাঁধ: কাঁধের পেশী গঠনের জন্য ওভারহেড প্রেস, আপরেস এবং ডেডলিফট করা যেতে পারে।
  • কোমর: কোমরের পেশী গঠনের জন্য স্কোয়াট, লং লিগ ডেডলিফট, এবং হ্যামস্ট্রিং কার্ল করা যেতে পারে।
  • পা: পায়ের পেশীগুলি সবচেয়ে বড় পেশী। পায়ের পেশী গঠনের জন্য স্কোয়াট, লেগ প্রেস এবং লেগ এক্সটেনশন করা যেতে পারে।

মোটা হতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার সময় ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে হবে।

অতিরিক্ত ওজন তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। ব্যায়াম করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

শেষ কথা

জিম করলে মোটা হওয়া সম্ভব, তবে তা নির্ভর করে জিম করার পদ্ধতি এবং খাদ্যাভ্যাসের উপর। জিম করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা হলে মোটা হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।