সকালে জিম করলে কি হয়? – সকালে জিম করার সুবিধা ও অসুবিধা

সকালে জিম করা একটি ভালো অভ্যেস।  সকালে জিম করার অনেক উপকারিতা ও সুবিধা রয়েছে।

সকালে জিম করলে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি হয়:

  • দিনের শুরুতে শক্তি এবং উদ্যম বাড়ে: সকালে ব্যায়াম করলে শরীরে অ্যাড্রেনালিন হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন শক্তি এবং উদ্যম বাড়ায়। তাই সকালে জিম করলে দিনের শুরুতে মনোবল বাড়ার পাশাপাশি কাজে মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে: সকালে খালি পেটে জিম করলে শরীর বেশি ক্যালোরি পোড়ায়। তাই সকালে জিম করলে ওজন কমাতে সাহায্য হয়।
  • মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: সকালে ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এই কারণে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত হয়। তাই সকালে জিম করলে মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • মুড ভালো থাকে: সকালে ব্যায়াম করলে শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। এই হরমোন মনকে সুখী এবং উদ্দীপ্ত করে। তাই সকালে জিম করলে মুড ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ কমে।

সকালে জিম করার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিত:

  • পর্যাপ্ত ঘুম: সকালে জিম করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো প্রয়োজন। কম ঘুমের কারণে শরীর দুর্বল থাকে এবং ব্যায়াম করতে অসুবিধা হয়।
  • হালকা খাবার খাওয়া: সকালে খালি পেটে জিম করা উচিত নয়। হালকা খাবার খেয়ে জিম করলে শরীরে শক্তির ঘাটতি হয় না।
  • প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষকের পরামর্শ অনুসরণ করা: সকালে জিম করার আগে একজন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রশিক্ষক সঠিক ব্যায়াম পদ্ধতি শিখিয়ে দেবে।

 

সকালে জিম করার অসুবিধা কি কি?

সকালে জিম করার আসলে তেমন কোন অসুবিধা নেই। তবে এর মধ্যেও দুটি সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে একটি আপনাকে প্রতিদিন সাফার করতে হবে আর অন্যটি খেয়াল রাখা জরুরী।

সকালে জিম করার অসুবিধার ক্ষেত্রে বলা যায়ঃ

  • ঘুম থেকে উঠতে সমস্যা হয়: সকালে জিম করার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো প্রয়োজন। কম ঘুমের কারণে শরীর দুর্বল থাকে এবং ব্যায়াম করতে অসুবিধা হয়।
  • হালকা খাবার খাওয়ার প্রয়োজন: সকালে খালি পেটে জিম করা উচিত নয়। হালকা খাবার খেয়ে জিম করলে শরীরে শক্তির ঘাটতি হয় না।

 

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা কি ভালো?

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা ভালো নাকি খারাপ তা নির্ভর করে ব্যায়াম এবং ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর।

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করার সুবিধাগুলি হল:

  • ওজন কমাতে সাহায্য করে: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে শরীর বেশি ক্যালোরি পোড়ায়। তাই ওজন কমাতে চাইলে সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা ভালো।
  • শরীরকে সতেজ করে তোলে: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে শরীরে এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে সতেজ করে তোলে।
  • মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এই কারণে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত হয়।

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করার অসুবিধাগুলি হল:

  • শরীর দুর্বল হতে পারে: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে শরীরে শক্তির ঘাটতি হতে পারে। তাই শরীর দুর্বল হলে সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা উচিত নয়।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকে: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা উচিত নয়।

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করার জন্য কিছু টিপস:

  • হালকা কিছু খেয়ে নিন: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে হালকা কিছু খেয়ে নিন। যেমন, এক গ্লাস ফলের রস বা এক টুকরো ফল।
  • ব্যায়ামের পরিমাণ কমিয়ে দিন: সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে ব্যায়ামের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
  • ব্যায়ামের পর কিছু খাবার খান: ব্যায়াম শেষে কিছু খাবার খান। এতে শরীরে শক্তির ঘাটতি পূরণ হবে।

 

সকালে জিম করার কতক্ষণ পর গোসল করা উচিত?

সকালে জিম করার পর ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর গোসল করা উচিত। এতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার জন্য সময় পাবে এবং আপনি আরামদায়ক বোধ করবেন।

সকালে জিম করার পর গোসল করার কিছু সুবিধা:

  • আপনার শরীরকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। জিম করার সময় আপনার শরীর গরম হয়ে যায়। গোসল করলে আপনার শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় এবং আপনি আরামদায়ক বোধ করেন।
  • আপনার শরীরের ঘাম এবং ময়লা দূর করে। জিম করার সময় আপনি ঘাম করেন। গোসল করলে আপনার শরীরের ঘাম এবং ময়লা দূর হয়ে যায় এবং আপনি আরও স্বাস্থ্যকর বোধ করেন।
  • আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। জিম করার সময় আপনি প্রচুর পরিমাণে ঘাম করেন। গোসল করার পর আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

সকালে জিম করার পর গোসল করার কিছু টিপস:

  • ঠান্ডা বা কুসুম গরম জলে গোসল করুন। গরম জলে গোসল করলে আপনার শরীরের তাপমাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে।
  • গোসলের সময় আপনার শরীরের ঘাম এবং ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
  • গোসল করার পর আপনার শরীরকে ভালোভাবে মুছে নিন।

আপনি যদি খুব ঘাম করেন বা আপনার শরীরে ঘামের গন্ধ হয় তবে আপনি জিম করার পরপরই গোসল করতে পারেন। তবে, যদি আপনি খুব ক্লান্ত বা অসুস্থ বোধ করেন তবে গোসল করার আগে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।

 

সকাল নাকি রাত, জিম করার উত্তম সময় কোনটি?

সকাল নাকি রাত, জিম করার উত্তম সময় কোনটি তা নির্ভর করে আপনার শারীরিক অবস্থা ও ব্যক্তিগত লক্ষ্যের উপর।

নিচে সকালে জিম করার সুবিধা ও অসুবিধা এবং রাতে জিম করার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ দেয়া হলোঃ

সকালে জিম করার সুবিধা:

  • শক্তি এবং মনোযোগ বাড়ে।
  • পেশী বৃদ্ধি এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

সকালে জিম করার অসুবিধা:

  • প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠতে আপনার অসুবিধা করতে পারেন।
  • আপনার শরীরের তাপমাত্রা কম থাকতে পারে, তাই আপনি ঠান্ডা অনুভব করতে পারেন।

রাতে জিম করার সুবিধা:

  • আপনি আপনার দিনের কাজ শেষ করার পরে ফ্রেস মাইন্ড নিয়ে জিম করতে পারেন।
  • আপনি ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করে আপনার শরীরকে শিথিল করতে পারেন। ফলে ঘুম ভালো হবে।

রাতে জিম করার অসুবিধা:

  • ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে।
  • কখনো কখনো আপনার পেশীতে ব্যথা হতে পারে।

 

সকালে জিমের কোন কোন যন্ত্রপাতি বা টুলস ব্যবহার করা উত্তম?

সকালে জিমের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি বা টুলস ব্যবহার করা উত্তম যা আপনাকে আপনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে।

এই টুলগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ওজন উত্তোলন সরঞ্জাম: ওজন উত্তোলন সরঞ্জাম পেশী গঠন এবং শক্তি বৃদ্ধির জন্য দুর্দান্ত। সকালে ওজন উত্তোলন করার সময়, আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার জন্য সময় দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনার ওয়ার্কআউটটি হালকা করে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে ওজন বাড়ান।
  • কার্ডিও সরঞ্জাম: কার্ডিও সরঞ্জাম আপনার হৃদয় এবং ফুসফুসকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। সকালে কার্ডিও করার সময়, আপনার শরীরকে উষ্ণ করার জন্য হালকা কার্ডিও দিয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে আপনার গতি বাড়ান।
  • স্ট্রেচিং সরঞ্জাম: স্ট্রেচিং আপনার পেশীগুলিকে নমনীয় এবং টেনসিল করতে সাহায্য করে। সকালে স্ট্রেচিং করার সময়, আপনার পেশীগুলিকে ধীরে ধীরে এবং নিয়মিত স্ট্রেচ করুন।

সকালে জিমের জন্য কিছু নির্দিষ্ট টুলের উদাহরণ:

  • ওজন উত্তোলন সরঞ্জাম: বারবেল, ডাম্বেল, কেবল মেশিন, রিভার্স ক্রুল মেশিন, স্কোয়াট র্যাক
  • কার্ডিও সরঞ্জাম: ট্রেডমিল, এলিপ্টিক্যাল, বাইসাইকেল, স্টেপপার
  • স্ট্রেচিং সরঞ্জাম: স্ট্রেচিং ম্যাট, স্ট্রেচিং স্ট্যান্ড, বল

সকালে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো জিম টুলস বা যন্ত্রপাতি এবং ওয়ার্কআউট কেমন হতে পারে তা আপনার বয়স, ওজন, শারীরিক সক্রিয়তা স্তর এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্যগুলির উপর নির্ভর করেৎ

এ ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সাথে পরামর্শ করা ভাল। তারা আপনাকে আপনার জন্য একটি ব্যক্তিগতকৃত ওয়ার্কআউট পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।